THE POEMS OF ARSHAD ULLAH IN BENGALI

PLEASE READ MY POEMS AND OTHER WRITINGS

poem কবিতা

2019-10-18 15:56:55 | poem
তারা আসছে ধেয়ে
আরশাদ উল্লাহ্‌

আর দেরী নয় সময় নেই হাতে
হুঁশিয়ার হুঁশিয়ার আসছে ধেয়ে
রক্তখেকো জানোয়ার দল বেঁধে
সাগরের ওপার থেকে!
আসছে হায়েনারা বায়না নিয়ে
শান্তির ঘরদোর ভেঙ্গে দিতে
রক্তের লিপসায় অর্থের লালসায়
আধুনিক রণসাজে মারণাস্ত্র হাতে
মানুষের শান্তি কেড়ে নিতে!
তারা আসছে ধেয়ে-
রক্তের হোলি-খেলায় মেতে
আকাশ জলপথে দ্রুতবেগে!

যুদ্ধ হত্যা পরস্পরের সম্পূরকতা
আদিকাল থেকেই - মানুষে মানুষে
রক্তপাত রাজ্যে রাজ্যে - নরহত্যা
চলছে, আত্মঘাতী সংঘাত সন্ত্রাসে
অদ্যাবধি, কোন কালে ছিল কি
পৃথিবীতে শান্তি কিংবা সম্পৃক্ততা?

চলছে নির্বিচারে হত্যা দেশে দেশে
যুদ্ধ কি থেমে গিয়েছিল কখনো
কালের কোন - লিখিত ইতিহাসে?
যুগে যুগে শান্তির যত সংজ্ঞা
সেই আদিকাল থেকে – অক্লেশে
কত চিন্তাবিদ মনীষী দার্শনিক-
জ্ঞানগর্ভ যুক্তিতে বোধক শাস্ত্রে
যুদ্ধের বিপরীতে - শান্তির বাণী
যুদ্ধবাজেরা - করেছে অবজ্ঞা!

হাজার বছর পরেও-
বুদ্ধদেব জীবিত ছিলেন অদ্যাবধি
তাঁর অহিংসার বাণীর ‘পরে;
নারী শিশু বৃদ্ধদের হত্যা
নারী ধর্ষণে – আরাকানে
নির্বিচারে, শিশুদের চিৎকারে
তিনিও গেলেন বহু দূরে সরে!

মানুষের মুখোশ পরা হায়েনা
যুদ্ধের আগুনে দানবীয় উল্লাসে
ঘরবাড়ি পথঘাট ধ্বংস করে
আমাদের রক্ত শুষে নিতে,
তারা আসছে ক্ষিপ্রবেগে অভিলাষে
ইরাক সিরিয়া ধ্বংস করে!

আহা সিরিয়ার শত নারী শিশু
বাঁচতে গিয়ে আশ্রয় খুঁজে খুঁজে
দিয়েছে প্রাণ সাগরে,
পদভ্রজে যেতে-
অনাহারে গিয়েছে মরে,
অনন্ত যাত্রা পথে!
বাকি যারা ছিল দেশে মাথা গুঁজে
টমাহক মিসাইল আর ক্লাস্টার বোমাতে
ছিন্নভিন্ন, দালানের ভগ্নস্তূপে মিশে গেছে!
যুগে যুগে নির্যাতিত নারী - পথে প্রান্তরে
যুদ্ধের বাজারে - নিলামে উঠেছে!
পৃথিবীর আধুনিকতার অন্ধকার প্রতিচ্ছবি!

হায়েনারা উল্লাসে করে নেশা
শুঁড়িখানায় বসে,
হুইস্কি ব্রান্ডি আর ভদকায়
ব্রান্ডের রঙ্গিন গ্লাসে!
চলে দর কষাকষি অস্ত্রের-
তুরুপের তাশে ফুর্তির আড্ডায়,
বাজার চাঙ্গা হয় রাতারাতি,
চুক্তি পত্রে স্বাক্ষর হয়ে যায়
রকমারি মারণাস্ত্রের; তারপর-
যুক্তি করে বেনিয়ার জাতি
যুদ্ধের ঝান্ডা উড়ায়
শান্তিপ্রিয় মানুষের দেশে দেশে!
১৮ অক্টোবর, ২০


poem কবিতা

2019-10-18 15:54:15 | poem
কাউকে বলিনি আজো
আরশাদ উল্লাহ্

দু’চোখের মিলনে গ্রাম্য নদীর খেয়া ঘাটে
অব্যক্ত মনের জড়তা- গিয়েছিল কেটে!
ছোট নদীর নড়বড়ে পানসী খেয়ার রশি টেনে
স্রোতস্বিনীর মধ্যিখানে যখন গিয়েছি –
তোমার উড়নার একাংশ উড়ে আমার চোখ ঢেকেছিল!
লজ্জা পেয়ে তুমি বারংবার বলেছিলে, ‘দুঃখিত, দুঃখিত!’
প্রতিউত্তরে কিছু বলিনি, উড়নাতে তোমার বুকের সুবাস –
বকুলের গন্ধের মতো মনে হয়েছিল।
অদূরে নদীর পারে সাদা বক গপ্‌ করে মাছ ধরে খাচ্ছে,
সঙ্কোচ ঝেড়ে ফেলে নির্দিধায় বলেছি, ‘কেউ দেখেনি-
শুধু একটি বক মাছ ধরে খেয়েছে - এদিকে তাকায়নি!’ ’
তুমি খিলখিল হেসে ওপারে পা রাখতে পিছলে পড়ে গেলে,
বই খাতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে……
গ্রামের বুড়ো নিকুঞ্জ শাস্ত্রি দেখলে বলত, ‘যাত্রা ভঙ্গ!’
আমরা তো কোথাও যাচ্ছিলাম না, দৈবাৎ প্রথম দেখা!
তোমার হাত ধরে প্রথমে - টেনে দাঁড় করিয়েছিলাম,
টাল সামলাতে না পেরে বুকে লেগেছে তোমার মুখ;
কপালের ঘামের গন্ধ তোমার আজো বুকে মাখা –
মাঝে মাঝে স্মৃতির সে ঘ্রাণ - আমার পরম সুখ!
তোমার সে ঘাম আর বকুলের ঘ্রাণ নির্লিপ্ত প্রাণে-
মৌসুমি বায়ু হয়ে এসে মৃদঙ্গের ধ্বনি হয়ে বাজে,
মনে মনে তুমি চলে আসো গানের সুরের মাঝে।
একথা তোমার-আমার, কাউকে বলিনি আজো।
১৭ অক্টোবর ২০১৯