THE POEMS OF ARSHAD ULLAH IN BENGALI

PLEASE READ MY POEMS AND OTHER WRITINGS

আমার ভাবনাগুলি

2019-10-16 11:01:32 | poem
হ্যালোইন উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছে আমার নাতনী পাট্রিসিয়া ক্যানাডার ভ্যাংকুভারে। এই উৎসবটির ইতিহাস অতি প্রাচীন। খ্রীষ্টপূর্ব পাঁচ শাতাব্দী থেকে খ্রীষ্টপূর্ব এক শতাব্দী পর্যন্ত ইউরোপ ও এশিয়ার একাংশের লোকেরা হ্যালোইন উৎসব পালন করত। এই উৎসবের উদ্দেশ্য ছিল - অশুভ অপশক্তি যাতে জনগণের কোন ক্ষতি করতে না পারে - সে বিশ্বাসে উৎসবটি পালন করত। Pre - Roman আমলে Bronze age শুরু হওয়ার প্রারম্ভে এই প্রথার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
পরবর্তি সময়ে রোমান এবং জার্মানিদের দ্বারা এই প্রথা বিলুপ্ত করা হয়।

হ্যালোইন উৎসবের ব্যাপারে আমার মোটেও ধারণা ছিলনা। ১৯৮২ সালের দিকে জাপানে আমাদের এক প্রতিবেশি অ্যামেরিকান মিসেস নান্সি শরতের একদিন বড় আকৃতির মিষ্টি কুমড়ার ভিতরের অংশ বের করে নাইফ দিয়ে কুমড়াটিতে সুন্দর ডিজাইনে বিভিন্ন আকৃতির ছেঁদা করে মুখোশ বানিয়ে সেটার ভিতরে মোম বাতি জ্বালিয়ে রাত ৮টায় দরজায় এসে টোকা দেন। সঙ্গে তার ছোট ৫ বৎসর বয়সের একটি সন্তানও ছিল। বাহিরে অন্ধকারে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন। দরোজা খুলে অদ্ভুত কুমড়ার সে মুখোশ দেখে ভয় পেয়ে প্রথমে মুখ দিয়ে কোন কথা বের হল না। নিরবতা ভংগ করে নান্সি স্বশব্দে হেসে বললেন, "ভয় পেয়েছ?"
লজ্জা পেয়ে বললাম, 'সামান্য'।
তারপর হাসাহাসি করে হ্যালোইনের গল্প বলেছিলেন। সেদিন প্রথম হ্যালোইন উৎসবের উপর আমার ধারণা হয়।

হ্যালোইন উৎসব ইউরোপে বিলুপ্ত হলেও এখন তা অ্যামেরিকাতে ব্যাপক ভাবে পালন করে। আমার নাতনি পাট্রিসিয়া ক্যানাডাবাসি হলেও প্রতিবছর ক্যানাডাতেও এই উৎসব চলছে। গত বৎসরও হ্যালোইনের ছবি পাঠিয়েছিল। সেগুলি ফেসবুকে পোষ্ট করিনি। আজ সকালে আবার পাঠিয়েছে। তাই ভাবলাম এই উৎসব নিয়ে কিছু লিখব।
এখন শরতকাল। উৎসব হবে ৩১ অক্টোবর। হয়তো অনেকে জানেন না যে অ্যামেরিকা ও ক্যানাডাতে আবাদ না করলেও খালি মাঠে অনেক মিষ্টি কুমড়া প্রকৃতি থেকে জন্ম নেয়। বেশি বড় বলে এগুলির স্বাদ তেমন নেই। মঠে এই কুমড়া অবহেলিত হয়ে পড়ে থাকে।

পাট্রিসিয়া ও তার বড় বোন হান্না এবারও হ্যালোইন উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভিতরের অংশ বের করে কিছুদিন রোদ্রে শুকিয়ে নাইফ দিয়ে ডিজাইন করা হবে। তারপর পাড়া-প্রতিবেশিরা মিলে ঐতিহাসিক এই উৎসব পালন করবে। নিম্নের ছবি পাট্রিসিয়াকে কাঁধে করে মিষ্টি কুমড়া আনতে দেখা যাচ্ছে।

আমার ভাবনাগুলি

2019-10-16 10:55:30 | poem
জাপানে তাইফুন হাগিবির প্রলয়কান্ড

গতকাল আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। কিন্তু সাইতামা বিভাগে বায়ুতে বেগ ছিল না। সারাদিন গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। সন্ধ্যা পাঁচটায় সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখি - যে কাউন্টারে ব্রেড, কেইক ও অন্যান্য খাবার দ্রব্য থাকে সেগুলি শুন্য। সব খাবারের আইটেম বিক্রি হয়ে গেছে। কারণ, বিগত ছয় দশক এত বড় তাইফুন প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্টি হয়নি। জাপান আবহাওয়া দপ্তর প্রতি ঘন্টায় লোকজনকে হুশিয়ার করে দিচ্ছে এবং নিকটস্থ শেল্টারে আশ্রয় নিতে বলছে। বিশেষ করে পার্বত্য এলাকার শহরগুলির অধিবাসিদের্। জাপানে চার দশকের জীবনে অনেক তাইফুন দেখেছি। কিন্তু দুদিন পূর্বে সৃষ্ট তাইফুন মহাসগরের দিক থেকে জাপানের দিকে এগুচ্ছে ঘন্টায় ৩৫ কিলোমিটার বেগে। কিন্তু বাতাসের গতি ঘন্টায় ১৪৪ কিলোমিটার। গতকাল আমার শহর এলাকায় বায়ুর বেগ বেশি না থাকায় জুম্মা নামাজে মসজিদে অনেক লোক সমাগম হয়েছে। সন্ধ্যায় আরেকটি সুপার মার্কেটে ব্রেড কিনতে গিয়েও কিছু পাইনি। জাপানিরা এসব ডিজাস্টারের ব্যাপারে বেশি সজাগ। কারণ, দুদিনের বেশি থাকবে এই তাইফুনের প্রভাব। তাই আগাম কেনাকাটি করে রেখেছে। আমি চিন্তিত নই দেখে আমার স্ত্রী অবাক। প্রশ্ন করল, 'তোমায় ভয় লাগছে না?'
জবাবে বললাম, "বাংলাদেশে ১৯৭০ সালের ভয়ংকর সাইক্লোন আমি দেখেছি। দশ লক্ষ লোকের প্রাণহানি হয়েছিল সমুদ্র উপকূলে। ওজনে দশ টন হবে একটি পুরানো সেগুন গাছ ব্রিটিশ আমলে তৈরী বিল্ডিংয়ের উপরে উড়ে এসে পড়েছিল। আমরা মরিনি। চার দশকে সাইতামাতে এমন কোন তাইফুন দেখিনি। ভয় পাব কেন?"

সারাদিন কিছু লেখালেখি করেছি। টিভির কাছে গিয়েও বসিনি। এদিকে আমার স্ত্রী উপর তলা ও নিচতলায় দৌড়াদৌড়ি করছেন। খবর শুনছেন।

জাপানে অক্টোবরের দিকেই বেশি তাইফুন হয়। প্রাচীন কালে চীনারা তাইফুন ড্রাগনেরা সৃষ্টিকরে মনে করত। জাপানীরাও এক হাজার বছর পূর্বে তাই মনে করত।

তাইফুনটির নামকরণ করা হয়েছে HAGIBI, এটা হল চলতি সালের ১৯ নম্বর তাইফুন। ইতিমধ্যে চিবা বিভাগের ইচিহারা সিটির উপর এসে সেটা টর্নেডুর আকৃতি নেয় এবং কিছু ঘরবাড়ি চূর্ণ করে দিয়েছে। সিজুওকা ও গুনমা বিভাগে পাহাড় ধ্বসে পড়েছে। আমার পার্শবর্তি শহর মরুইয়ামাতে লোকজন ফ্লাডের ভয়ে বহুতল বিশিষ্ট শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। কারণ শহরটিতে পর্বত বেশি। সে এলাকার পানি ফুলে ফেঁপে ফ্লাড হয়। নদীর বেড়িবাঁধ ডুবে যায়।

জাপানে ভয়ংকর তাইফুনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মাত্রা হল ৫। অদ্য বিকাল তিনটায় পাঁচ মাত্রা সংকেত দিয়েছে।
বর্তমানে হাগিবি কান্তো অর্থাৎ টোকিও সাইতামা এলাকায় আঘাত করেছে। একটি সংবাদে বলা হয়েছে যে তাইফুনের জোর এখন কমছে।

তাইফুন এবং ঘুর্নিঝরে যে ব্যতিক্রম, তা হল - তাইফুনে অধিক বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু সাইক্লোনে কম বৃষ্টিপাত হয়। সে জন্য সাইক্লোনে বায়ুর বেগ ঘন্টায় ২০০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত হয়। ফলে বাড়ি ঘর অধিক ক্ষতগ্রস্থ হয়। তাইফুনে সুমুদ্রের উপকুলস্থ এলাকা বেশি ক্ষতগ্রস্থ হয়। বৃষ্টিপাত বেশি হয় বলে বায়ুর বেগ সাইক্লোনের মত বেশি বাড়ে না। তবে হাগিবির বেগ ঘন্টায় ১৪৪ কিলোমিটার ভয়ংকর। তাইফুনের সময় ভূমিকম্প হলে পাহাড়ের ধ্বসে প্রাণহানি বৃদ্ধি পায়।
নিচের ফটো জাপান নিউজ থেকে নেয়া হয়েছে।
১২ কটোবর ২০১৯

জাপানে তাইফুন হাগিবির তান্ডব
(দ্বিতীয় পর্ব)
আরশাদ উল্লাহ্‌

নাগানো বিভাগটি মধ্য জাপানের কান্তো এলাকাতে। এই এলাকাতে টোকিও, সাইতামা, কানাগাওয়া ও চিবা বিভাগ ছাড়াও আরো কয়েকটি বিভাগ আছে। নাগানোর অধিকাংশ এলাকা পার্বত্য অঞ্চল। প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলিতে সমৃদ্ধ নাগানোতে 'উইন্টার অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয়েছে'। কারণ, শীতকালে প্রচুর তুষারপাত হয় নাগানোতে। প্রায় সবগুলি পর্বতের চূড়া বরফে সাদা হয়ে যায়। উইন্টার অলিম্পিকের জন্য উপযুক্ত স্থান নাগানো বিভাগ। টোকিও থেকে সাধারণ ট্রেন ছাড়াও বুলেট ট্রেনেরও চলাচল আছে। তাইফুন - ১৯ কে 'হাগিবি' নাম দেয়া হয়েছে। দুদিন যাবত তাইফুন ও ক্রমাগত বৃষ্টিপাতের কারণে নাগানোর 'চিকুমা নদীর' পাকা বেরিবাঁধ পাহাড়ি ঢলের খরস্রোতা পানির চাপে ভেঙ্গে গিয়ে বিশাল এলাকার আবাসিক এলাকাটি মুহূর্তে ডুবে যায়। বাড়ির দুতলায় পানি উঠেছে। আগে থেকেই সরকার সমুদয় ব্যবস্থা করে রেখেছিল। কিন্তু বেরিবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়াতে ফায়ার সার্ভিস, জাপান ডিফেন্স ফোর্স ও পুলিশের গাড়ি আবাসিক এলাকাটিতে আবদ্ধ পরিবারগুলিক উদ্ধারে যেতে পারছিল না। তাই হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। নিম্নের ফটোতে প্লাবিত এলাকার চিকুমা নদী দেখা যাচ্ছে। গতকাল থেকে সব ধরনের ট্রেন সার্ভিস বন্ধ ছিল। বুলেট ট্রেন পার্কিং করার স্থানও প্লাবিত হয়েছে। হাইওয়ের উপর থেকে বৃহদাকার একটি ক্রেন তাইফুনে ভেঙ্গে পড়েছে। শতাব্দির বৃহত্তম এই তাইফুনের জন্য সরকার সব রকম ব্যবস্থা করে রেখেছিল। সত্তর মিলিয়ন লোকের খাবার সহ অন্যত্র সরিয়ে নিবার বন্দোবস্ত ও শেল্টার করেছে। কিন্তু সরকারি শেল্টারে মাত্র ৫০,০০০ জন আশ্রয় নিয়েছে। ট্রেন চলাচল আজ দুপুর থেকে শুরু হবে।

এই তাইফুনে নিহত হয়েছেন ১৪ জন এবং ১২ জন মিসিং খবরের কাগজে প্রকাশ পেয়েছে।
নিম্নের ছবিগুলি নেট পত্রিকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
১৩ অক্টোবর ২০১৯




poem কবিতা

2019-10-16 10:52:19 | poem
প্রাতের অন্ধকার
আরশাদ উল্লাহ্

ভারি বৃষ্টিতে - প্রাতের অন্ধকার-
বড় অসহনীয়, কিছু ইচ্ছার মৃত্যু,
স্বপ্নে যাকে দেখে ভোরের আলোতে
কলম আর খাতা খুঁজি কবিতা লিখার।
সে অনুভূতি ভিন্ন স্বাদের গুপ্ত কামনা,
সদ্য ফুটন্ত - প্রভাত পদ্মকলির মতো
কিশোরীর বিনম্র মুখ, এক স্বপ্নকন্যা।

পদ্মার পাড়ে একা পানসিতে বসা
ভোর বায়ুতে উড়ে - দুরন্ত উড়না,
চোখেমুখে সাগরের দুর্দান্ত নীলিমা,
যে চোখে পড়েছে শঙ্খচিলের ছায়া,
আহা কি যে তার গভীর মমতা মায়া,
ক্ষণস্থায়ী জীবনের - নীল স্বপ্নকন্যা।

পানসিতে রূপসীর হাতে নীল চুড়ি
রূপালী ঢেউয়ে শ্বেত ফেনার কুঁড়ি,
স্বপ্নকন্যার মমতার বন্যাতে ভেসে
তার পানসিতে পা রাখার আগেই-
ব্জ্রঝড়ে স্বপ্নভগ্ন; শূন্য ঘরে আমার-
কবিতার খাতা আর কলম খুঁজে মরি।


৩ অক্তোবর ২০১৯