THE POEMS OF ARSHAD ULLAH IN BENGALI

PLEASE READ MY POEMS AND OTHER WRITINGS

Bengali New Year's poem and greetings

2019-06-02 20:29:29 | Weblog
বিশ্ব-উষ্ণতা ও কিছু ভাবনা
আরশাদ উল্লাহ্‌

আবহাওয়া পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণতার কারণ কি তা বের করতে কোন গবেষণাগারে বসে গবেষণার প্রয়োজন হবেনা। সাধারণ একজন মানুষ ঘরে বসে সামান্য ধ্যান করে কারণগুলি কি তা বুঝতে পারবেন। নিম্নে ক্রমানুসারে কয়েকটি ধারণা দিলাম। এই ধারণাগুলির যথার্থতা কতটুকু তা উপলদ্ধি করলেই বিশ্ব-উষ্ণতা ও তারফলে মানবজাতি বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা কেন - তা বুঝা যাবে। পৃথিবীর আকাশে আবহাওয়া পরিবর্তনের পিছনে যে কারণগুলি তা ও বুঝা যাবে।

১। ভূগোলের উপর যাদের ধারণা আছে তারাই আবহাওয়া পরিবর্তনের উপর সহজে ধারণা নিতে পারবেন। ১৬০০ শতাব্দির পূর্বে বিশ্বাস করা হত যে উত্তর মেরু বরফাবৃত বিশাল যে অঞ্চল। সেখানে শ্বেত ভালুক ও অন্যান্য প্রাণীর আবাসভূমি। তারপর বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার কারণে জানা গেল যে দক্ষিণ মেরুর মত উত্তর মেরু ভূমির উপর জমাটবাধা বরফ নয়। এটা হল আর্কটিক সাগর। সাগরের পানির উপর বরফের স্তুপ। এই বরফের স্তুপ আদিকাল থেকে ছিল। উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর শীতল বায়ু পৃথিবীর বায়ু প্রবাহের উপর ভারসাম্য রেখে প্রবাহিত হত বলেই বিশ্ব-তাপমাত্রায় কোন পরিবর্তন হয়নি। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার কারণে সাগর মহাসাগরে এখন শত শত জাহাজ চলাচল করছে। পরবর্তিতে উড়োজাহাজ আবিষ্কারের ফলে বিশ্ব-বানিজ্যে ব্যাপক অগ্রগতি হয়। শত শত যুদ্ধ জাহাজ, বানিজ্য জাহাজ, যাত্রিবাহি জেট বিমান চলাচল শুরু হয়। প্রতিটি বানিজ্য জাহাজ, যাত্রিবাহি বিমান থেকে ব্যাপক পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়ে বায়ু মন্ডলে মিশ্রিত হয়ে উত্তাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রতিদিন কত হাজার জাহাজ ও জেট বিমান থেকে কার্বন গ্যাস নির্গত হয়ে বায়ু মন্ডল দূষিত করছে চিন্তা করে দেখলে বিশ্ব উষ্ণতার একটি কারণ সহজবোধ্য হয়।

২। গ্রীন হাউজের গ্যাস শীত প্রধান দেশগুলি থেকে নির্গত হয়ে বায়ু মন্ডল দূষিত করছে। গ্রীন হাউজ গুলিতে কেরোসিন ও ডিজেল চুল্লি থেকে নির্গত গ্যাস বায়ু মন্ডলে মিশে যাচ্ছে।

৩। ইটভাটা থেকে নির্গত গ্যাস বারমাস বায়ু মন্ডলে মিশ্রিত হয়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করছে। রাজধানী ঢাকার চতুর্দিকে পঞ্চাশটির উপর ইটভাটা রয়েছে। ইটভাটা থেকে নির্গত কালো কার্বন কণা উড়ে গিয়ে হিমালয়ের গ্লেসিয়ারগুলি গলিয়ে দিয়েছে বলে বিজ্ঞানিরা প্রমাণ পেয়েছেন। হিমালয়ের গ্লেসিয়ার গলে যাওয়াতে ভারত উপমহাদেশে তাপমাত্রার ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে এবং তাপমাত্রা বেড়েছে।

৪। ভারত ও বাংলাদেশে একসময় ব্যাপক বৃক্ষলতাদি পূর্ণ ঘন জঙ্গল ছিল। এখন সে সকল জঙ্গল আর নেই।বিশ্ব-প্রকৃতি নষ্ট হওয়ার ফলে বায়ু মন্ডলে অক্সিজেন গ্যাস পর্যাপ্ত নেই বিধায় - বিভিন্ন রকম নতুন রোগ দেখা দিচ্ছে। তন্মধ্যে এলার্জি এবং এজমা অন্যতম।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে ঘন জঙ্গল ছিল। সেগুলি ধংশ করে এখন কোন কোন দেশে রাবার প্লান্টেশন হচ্ছে। তাতে অনেক জংলি প্রাণী নিশ্চিন্ন হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। তাই শীতল পরিবেশ কমে যাচ্ছে।

৫। প্যারিসে জাতিপুঞ্জের UNFCCC ( United Nations Framework Convention on Climate Change ) কর্তৃক আয়োজিত ২০১৬ সালের ২২ এপ্রিল বিশ্ব-উষ্ণায়ন রোধ করার জন্য যে ঐতিহাসিক সন্মেলনটি হয়েছিল - সেই সন্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল বিশ্ব তাপমাত্রা বাড়ার পরিমাণ ২ ডিগ্রীর নেচে রেখে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রীর কাছাকাছি ধরে রাখা এবং সে জন্য উপযুক্ত পন্থা উদ্ভাবন করা। প্যারিস সন্মেলনে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১৫৯ টি দেশ স্বাক্ষর করেছে।
সে সন্মেলনে গ্রীনহাউস থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস পর্যাপ্ত পরিমাণ কমিয়ে আনার ব্যাপারেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এই সন্মেমেলনে যে চুক্তি হয়েছে সে চুক্তি অনুসারে ফ্রান্স উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ অবলম্বন করেছে। দেশটির আবহাওয়া মন্ত্রী Nicolas Hulot ঘোষণা করেন যে আগামি ২০৪০ সালের মধ্যে ফ্রান্সে পেট্রল ও ডিজেল চালিত গাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, ২০২২ সালের মধ্যে ফ্রান্সে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
নরওয়ে ঘোষণা করেছে ২০২৫ সালের মধ্যে পেট্রল ও ডিজেল চালিত গাড়ি বন্ধ করে দিবে।
হল্যান্ড ২০৩০ সালের মধ্যে পেট্রল ও ডিজেল চালিত সকল গাড়ি বন্ধ করে দিবে।
তাছাড়াও গ্রীনহাউস থেকে নির্গত গ্যাস নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিয়ে আনার ঘোষণা করেছে।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ঘোষণার মাধ্যমে ২০১৭ সালে এই চুক্তি থেকে বের হয়ে যা্ন।

যদি তাই হয় এবং অ্যামেরিকা বিশ্ব-উষ্ণায়ন প্রতিরোধে সারা বিশ্বের সাথে সন্মিলিত ভাবে কাজ না করে। এমনতর সিদ্ধান্তে বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধ করা সম্ভব হবে কি?
২ জুন, ২০১৯

コメントを投稿